🐍 “যদি শকুনির ছক সফল হতো — কেমন হতো আমাদের ইতিহাস?”
১️⃣এই লেখায় আমরা জানব, যদি কৌরবরা জিতত তাহলে আমাদের ধর্ম, সমাজ, নারীসম্মান ও ইতিহাস কেমন হতো তার একটা বিকল্প চিত্র।
1️⃣ হস্তিনাপুর হতো ‘ভয়ের রাজ্য’, ভালোবাসার নয়
কুরুক্ষেত্রের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরে যখন রাজসিংহাসনে বসত দুর্যোধন,
তখন চারদিকে বাজত জয়ধ্বনি — কিন্তু সেটা হতো শুধু কর্ণধারদের মুখে।
📍 সাধারণ মানুষের মনে থাকত একটাই অনুভূতি — ভয়।
ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শিখত —
“রাজা মানে শাসক, নয় রক্ষক।”
ভক্তি নয়, তোষামোদ দিয়ে তৈরি হতো শাসনব্যবস্থা।
রাজনীতি হয়ে উঠত শুধুই ক্ষমতার খেলা,
যেখানে মমতা, দয়া, ন্যায় — এদের জায়গা থাকত না।
২️⃣2️⃣ দ্রৌপদীর অপমান সমাজের স্বীকৃত নিয়ম হয়ে যেত
জীবনের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে আছে শ্রীমদ্ভগবদ গীতায়। আত্ম-উন্নয়ন, মানসিক শান্তি, কর্ম ও ধর্ম — সবই আছে এক বইয়ে।
👉 এই পবিত্র গীতা বইটি এখনই কিনে রাখো তোমার বাড়ির জন্য – প্রতিদিন পড়ো, প্রতিদিন নতুন করে জানো নিজেকে।
পাণ্ডবদের পরাজয়ের মানে শুধু এক যুদ্ধ হারা নয়,
তা মানে — দ্রৌপদী তার অধিকার হারাতো, হারাতো সম্মান রক্ষার সুযোগও।
“নারীর সম্মান তখন বিলাসিতা হতো, যদি কৌরবরা জিতত।”
যখন এক নারীকে সভায় টেনে এনে তার বস্ত্রহরণ করা হয়,
তখন সমাজ দেখে, কিন্তু নীরব থাকে। “যদি কৌরবরা জিতত, হস্তিনাপুরের শাসনব্যবস্থা হয়ে উঠত ভয়ের প্রতিচ্ছবি।”
📍
যদি সেই সমাজের নেতারা জয়ী হয়,
তবে ভবিষ্যতের মায়েরা, বোনেরা, কন্যারা —
আর কখনও ন্যায়ের আশায় মুখ তুলত না।
নারীর প্রতি সহিংসতা হয়ে উঠত ‘জয়ীর অধিকার’।
পাঠ্যবইয়ে লেখা হতো —
❝ রাজনীতির দাবার গুটি হিসেবে নারী ব্যবহৃত হয়, সেটাই রীতি। ❞
৩️⃣3️⃣ কৃষ্ণ হতেন এক বিতর্কিত, অপঠিত চরিত্র
যদি কৃষ্ণের কৌশল ব্যর্থ হতো,
তবে মানুষ বলত —
“সে একজন চতুর চরিত্র, এক রণকৌশলী ষড়যন্ত্রী।”
📍
গীতা জন্ম নিত না।
যা আজ আত্মহত্যাপ্রবণ এক ছাত্রকে বাঁচায়,
অবসাদে থাকা কর্মীকে সাহস দেয় —
সেই গীতা থাকত না পৃথিবীর বুকে।
গীতার বাণী — “তোমার কর্তব্য করে যাও, ফলের আশা কোরো না”
হতো এক বিস্মৃত চিঠি — যা কেউ পড়েনি, কেউ বিশ্বাস করেনি।
4️⃣ভালো মানুষদের দৃষ্টান্ত নয়, ব্যর্থতার চিহ্ন হিসেবে মনে রাখা হতো
যুধিষ্ঠিরের সত্যবাদিতা,
অর্জুনের নিয়ন্ত্রণ,
নকুল-সহদেবের বিনয় —
সবটাই সমাজ মনে রাখত এই বলে —
❝ ভালো হয়ে কেউ জেতে না ❞
📍
ভবিষ্যতের সন্তানদের শেখানো হতো:
“দয়ালু হো, হারবে। ভয়ঙ্কর হও, রাজা হবে।”
একটা পুরো প্রজন্ম শিখত, ভালোবাসা, বিশ্বাস, আত্মত্যাগ —
এগুলো কেবল উপন্যাসে চলে, রাজনীতিতে নয়।
লক্ষণ ও উর্মিলার বিস্ময়কর প্রেমের গল্প জানতে এই হৃদয়ছোঁয়া কাহিনীটি পড়ে ফেলো এখনই »
5️⃣ “ধর্ম” শব্দটাই হারিয়ে যেত মূল্যবোধের অভিধান থেকে
পাণ্ডবদের পরাজয় মানেই ধর্মের মূর্তি ভেঙে টুকরো করে দেওয়া।
যেখানে ধর্ম ছিল সমাজের অন্তর্নিহিত চালিকাশক্তি,
সেখানে দুর্যোধন জিতলে মানুষের চেতনাই পাল্টে যেত।
📍
তখন আর কেউ বলত না —
“সততাই শক্তি।”
বরং শিখত —
“ধোঁকা দাও, জয় তোমার।”
মন্দির থাকত, কিন্তু ঈশ্বর নিঃশব্দ থাকত।
পাঠ থাকত, কিন্তু আত্মা কাঁদত।
এইসবের মাঝে কী হারিয়ে যেত?
- মা কুন্তীর কান্না হারিয়ে যেত রাজভবনের পাথরে
- দ্রৌপদীর আগুনসম শপথ চাপা পড়ত ইতিহাসের ধুলোর নিচে
- কৃষ্ণের বাঁশি চুপ করে যেত… আর গীতার শব্দগুলো মরে যেত গলার ভিতরেই
এই জগতে কেউ কাউকে ভালোবাসত না —
কারণ ভালোবাসা ছিল দুর্বলতা।
এমন এক পৃথিবী চাই কি?
তাই তো কৃষ্ণ হাসেননি, যুদ্ধের আগে অশ্রু ঝরিয়েছিলেন।
Pingback: ১৪ বছরের অপেক্ষার গল্প – উর্মিলা ও লক্ষ্মণের নীরব প্রেম